বৃহস্পতিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১২

লাল রঙ্গনে ভরা অঙ্গন

বাংলার ঋতুবৈচিত্র্যে প্রকৃতি প্রতিনিয়ত তার রূপ বদল করে। সময়ের পালাবদলে গ্রীষ্ম, বর্ষা থেকে বসন্ত_ ছয়টি ঋতুভেদে প্রকৃতি নিজেকে গড়ে নেয় আপন রূপে, নতুন সাজে। ফুলে-ফলে, পত্র, বৃক্ষ-তরুলতায় প্রকাশ পায় এই পরিবর্তন, নতুনের স্পন্দন। আবার বছরব্যাপী প্রকৃতিতে চেনা রঙে, একই ঢঙে বিরাজ করে এমন অনুষঙ্গও বিরল নয়। আমাদের পুষ্প-উদ্যানে সারা বছর সুরভি ছড়ানো ফুলের মধ্যে একটি হলো 'রঙ্গন'। সবুজ পাতার কোলে গুচ্ছ গুচ্ছ লাল ফুলের সৌন্দর্য বড়ই দৃষ্টিনন্দন। বাংলাদেশের প্রায় সব বাগানে রঙ্গনের দেখা মেলে। আকর্ষণীয় সৌন্দর্যে, বর্ণবৈচিত্র্যে রঙ্গন বাগানের শোভা বৃদ্ধি করে।
ঘনবিন্যস্ত পাতার কোলে গাঢ় লাল রঙের পুষ্পমঞ্জরিতে অসংখ্য ফুলের সমারোহ কার না দৃষ্টি কাড়ে! রঙ্গন ফুল আকারে ছোট, নলাকৃতি। তারার মতো চারটি পাপড়ির বিন্যাসে অনুপম রঙ্গনের মাধুর্য। বিশেষ করে, থোকায় থোকায় সদ্য ফোটা লাল ফুলের উচ্ছ্বাস পুষ্পপ্রেমীর মনে জাগায় ভালোলাগার এক অপার্থিব অনুভূতি।
বাগানে সাধারণত লাল রঙের ফুলই বেশি দেখা যায়। লাল ছাড়াও রঙ্গন গোলাপি, হলুদ ও সাদা রঙের হয়ে থাকে। রঙ্গনগাছ আকারে ছোটখাটো, ঝোপজাতীয়, ডালপালাগুলো লতানো। ঘন চিরসবুজ পত্রনিবিড় এ গাছ দুই থেকে ছয় মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। ঢাকায় শাহবাগের পাবলিক লাইব্রেরি চত্বর, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্ক, পান্থপথের পান্থকুঞ্জ, কার্জন হলসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় রঙ্গন চোখে পড়ে। বাগান ছাড়াও বাড়ির আঙিনা, সড়কদ্বীপ ও সড়ক-বিভাজকে রঙ্গনগাছ লাগাতে দেখা যায়।
লাল রঙের রঙ্গন ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম 'ইক্সোরা কক্সিনিয়া' (Ixora coccinia)। এটি মূলত এশীয় অঞ্চলের প্রজাতি। সহজেই এর চাষ করা যায়। পরিণত গাছের ডাল নিচ থেকে কেটে রোপণ করে নিয়মিত যত্ন নিলে শিকড় গজায়। এ ছাড়া কলম করেও বংশবিস্তার করা যায়।
প্রায় সারা বছরই ফুল ফোটে বলে রঙ্গন বাগানের বর্ণবৈচিত্র্যে এক ভিন্ন সুষমা যোগ করে। তাই পুষ্প-নিসর্গের শোভাবর্ধনে পরিকল্পিত রঙ্গনবীথি গড়ে তোলা যেতে পারে। 
(০৬ নভেম্বর, ২০১২ দৈনিক সমকাল-এ প্রকাশিত) 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

অর্কিড কাঞ্চনে মুগ্ধতা

পৌষের এক কুয়াশামোড়ানো সকালে প্রকৃতির একটু সবুজ ছোঁয়া পেতে গিয়েছিলাম রাজধানীর রমনা পার্কে। শীতের চাদর ফুঁড়ে এক চিলতে রোদের ঝিলিক ভারী মিষ্টি ...