বুধবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

ওগো মোর অপরাজিতা


কতদিন ছিলে দূর অপরিচিতা

রক্তজবার স্নেহে হয়েছ মিতা
আজ থেকে তুমি মোর অপরাজিতা।

কুসুম কোমল ওই লতার কোলে
নীলে ঝিলমিল ফুল যখন দোলে
হাওয়ার কাঁপনে জাগে কত না কথা
আমার মনেও তুমি আলোকলতা।

নয়ন জুড়াও তুমি অসীম নীলে
নিজেকে হারাই সেই রঙমিছিলে
নিবিড় আবেগে মনও রাঙিয়ে দিলে।

কাছে এসো ওগো মোর অপরাজিতা
বেঁধে দেব তব চুলে মায়াবী ফিতা
আমি আজ সকালের ও প্রজাপতি
তোমার পাপড়ি ছুঁয়ে করি মিনতি:

ভালোবাসাময় নীল আলো ছড়িয়ে
অপরাজিতার মতো নিও জড়িয়ে
সারাটা জীবন রঙে দিও ভরিয়ে।

৩ ফাল্গুন ১৪২৮
চট্টগ্রাম
 

মঙ্গলবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

ছাতিমের ঘ্রাণমাখা রাত্রি

তুমি তো আমাকে অনেক কিছু উপহার দাও

মিও ভাবতে থাকি তোমাকে কী দেওয়া যায়।

কার্তিকের এই বৃষ্টিভেজা রাতে দখিনা বাতাসে ভেসে আসা ছাতিমের ঘ্রাণ মনে করিয়ে দেয়
এই ঋতুতে এর চেয়ে ভালো উপহার আর হয় না।
তাই আমি তোমাকে দিতে চাই ছাতিমের সুগন্ধি,
ছাতিমের গন্ধমাখা দীঘল রাত্রি।

আহা, বাতাস মাতাল করা এই ঘ্রাণ নাকের ভেতর দিয়ে পৌছে যায় হৃদয় থেকে মরমের গহীনে;
এ যেন মাটির পৃথিবীতেই স্বর্গীয় অনুভূতি।
এই রাত আমার সামনে মেলে ধরে বহুরাত্রি আগে ফেলে আসা ছেলেবেলা;
মধুর সুবাসে মোহিত এক কিশোরের মুগ্ধতা
সেই গন্ধশোভিত বেলায় আমার হৃদয় ভরে উঠত কত রঙে, কত স্বপ্নে, ভালো লাগা কিশোরীর কাছে যাওয়ার কল্পনায়।

এই রাত্রি, এই সুগন্ধি, এই মুহূর্ত কতটা অমূল্য কেবল হৃদয়ই জানে। কারণ এর কোনো বেচাকেনা হয় না, এসব মিলবে না কোনো দোকানেই। তার চেয়েও অপূর্ব, এই আনন্দ একান্তই আমার, এই সুখের রাজ্যে আমার একার রাজত্ব। এই মুহূর্তটি মিলবে কেবল এক্ষণেই, কাল পর্যন্ত ধরে রাখার উপায় নেই।

তবে তোমার কাছে কী করে পৌছাই এই উপহার:
ছাতিমের গন্ধমাখা দীঘল রাত্রি। কী করে তোমাকে দেই আমার আনন্দরাজ্যের একচিলতে সুখ?
চর্যাপদের কবিদের মতো আমারও ভরসা তাই শব্দ, হৃদয় উৎসারিত পঙতিমালায় লেখা থাক এইসব আনন্দ। এই উপহার বিনিময় হোক ঘ্রাণমাখা শব্দে, মোহময় অনুভবে।

২ কার্তিক ১৪২৮
সন্দ্বীপ।

রক্তজবার পদ্য

১. কোকিলের কুহুতানে ভ্রমরের গুঞ্জনে 

এসেছে ফাগুনবেলা।

গাছেতে নতুন কুঁড়ি ফুলের মিষ্টি রূপে

বসেছে রঙের মেলা।

শিমুলের কচি ডালে একজোড়া টিয়ে যেন

মেতেছে প্রেমের সভায়।

অনেক ফুলের শোভা ডাকছে তবুও আমি

মেতে আছি রক্তজবায়।। 

২. চাপ লেগে ডাক গেছে ভুলে

দেখলাম ঘুমলাগা চোখ খুলে

বিপুল স্বপ্নজড়ানো নাতিদীর্ঘ ভ্রমণ শেষে

ক্লান্ত পান্থপাদপ ফের উঠেছে জেগে জোড়া রক্তজবার স্মৃতির আবেশে

নাগকেশরেরর ওই তামাটে পাতার কোলে

স্মৃতিকাতর মন কাকে খোঁজে অনুক্ষণ হৃদয় যেন বাসরলতার মতো দোলে।

প্রথম দেখার রক্তজবা









রঙিন ফুলের মায়ায় ভরা
শুভ্র আলোর প্রাতে
শান্ত মনে তোমার জন্য 
ছিলেম অপেক্ষাতে।

মন-কোকিলের কুহু সুরে
বাতাস তখন মাতে
তুমি এলে সদ্য ফোটা
রক্তজবা হাতে।

স্নিগ্ধ হেসে একজোড়া ফুল 
দিলে উপহার 
প্রশান্তিতে আমার মনে
আনন্দ ঝংকার।

সদ্য ফোটা রক্তজবার 
হলদে ক'টি রেণু
মন-মননে বাজায় যেন
অপার প্রীতির বেনু।

ফুল দুটিকে আলতো করে
বুকপকেটে রেখে
কাটল বেলা অনেক ফুলের
রঙের চমক দেখে।

কল্পনাতে তোমার পায়ে
পরিয়ে রূপার নুপূর
ফুলের শোভায় পাখির সভায়
নেমে এলো দুপুর।

ফেরার পথে ফুল দুটিকে 
দেখছি ছুঁয়ে হাতে 
মুগ্ধ হৃদয় ভাবছে যেন
চলছি তোমার সাথে।

পেরিয়ে বিকেল, পাখির ডানায়
নামল প্রথম সন্ধ্যে
বদলে যাওয়া জীবন পেলাম 
তোমার স্মৃতির গন্ধে।

আজও আমার বাগানজুড়ে
কত না ফুল ফোটে
সব ছাপিয়ে রক্তজবার
ছবিই ভেসে ওঠে।

ভালোবাসার ফুলদানিতে 
বুকের খুবই কাছে
প্রথম পাওয়া রক্তজবা
যত্নে রাখা আছে।


অর্কিড কাঞ্চনে মুগ্ধতা

পৌষের এক কুয়াশামোড়ানো সকালে প্রকৃতির একটু সবুজ ছোঁয়া পেতে গিয়েছিলাম রাজধানীর রমনা পার্কে। শীতের চাদর ফুঁড়ে এক চিলতে রোদের ঝিলিক ভারী মিষ্টি ...