অপরূপ
সৌন্দর্য ভরা সে নিসর্গ উদ্যান।
সুনসান
নীরব
কোথাও
কোনো সাড়া নেই, শব্দ সেই।
ফুল,
পাখি, নদী, ঝরনা, সবুজ অরণ্য সবাই চুপচাপ।
দিনের
প্রথম আলোয় ধন্য সে সকালে ধীর লয়ে এলো মেয়েটি।
নীল
জামাপরা মেয়ে, ওর নাম মাধবীলতা।
বসল
সে বয়েসী বটগাছটির তলায়
দু’চোখে প্রেমের শুভ্র আবির মেখে ব্যস্ত পায়ে এলো ছেলেটি।
ছেলেটির
নাম সকাল।
তারপর
সম্মিলিত হাসিতে ঝলমলে হয়ে উঠল ওরা দু’জন।
একজোড়া
বটের পাতা ঝরে পড়ে যেন তাদের সম্ভাষণ জানাল।
সুয্যিটা
উত্তাপ ছড়াতে শুরু করল, রোদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে
সেই
সঙ্গে বাড়ল শাদা মেঘের ছায়া
গোটা
পরিবেশ মুখরিত হয়ে উঠল পাখির কিচিরমিচির সুরে
ইথারে
ভেসে এলো দূরের কোনো নদী বয়ে চলার কুলুকুলু শব্দ
ওরা
দু’জন তখন আলাপে ব্যস্ত
হলুদ
একটি প্রজাপতি এসে বসল মেয়েটির হাতে
প্রজাপতি
উড়ে যেতেই সেখানটাতে ছুঁয়ে দিল ছেলেটি।
আবার
একসঙ্গে হেসে উঠল ওরা
হেসে
উঠল সকাল ও মাধবীলতা।
হেসে
উঠল বাগানের ফুলগুলো
কসমস,
ডালিয়া, গাঁদা, কাঞ্চন, বেলি, রক্তজবা, চন্দ্রমল্লিকা আর নয়নতারা
সবাই
হেসে উঠল যে যার রঙে
গাঁদার
কাঁচা হলুদ
বেলির
শুভ্র শাদা
রক্তজবার
রক্তলাল
আর
নয়নতারার গোলাপি আভায় একসঙ্গে রঙিন হয়ে উঠল ওরা দু’জন
সকাল
ও মাধবীলতা।
সুয্যির
আকাশবদলে দুপুর গড়াল
বিকেলের
বুক চিরে নেমে এলো বিকেলের ছায়া।
তখনও
তারা আলাপে মত্ত
হাসি,
কথা, কবিতা, গানে আর আলাপনে গোধুলির লগ্ন ছুঁয়ে নেমে এলো সন্ধ্যা।
সন্ধ্যার
রঙ গায়ে মেখে সেদিনের মতো ওরা ঘরে ফিরল।
এমনি
করে একদিন
দুইদন
তিনদিন
অনেকদিন
কাটল।
তারপর
সেই উদ্যানে আবার সকাল হলো
কিন্তু
সুয্যি ওঠে না
ফুল
ফোটে না
পাখিগুলো
আর ডাকে না
নদীটি
আবার নীরব
বটের
তলার ঠাণ্ডা বাতাসে একটি পাতাও ঝরে না
সেই
বটের মগডালে বাসা বেঁধেছিল একজোড়া চড়ুই
ওরা
বলাবলি করে- কী হলো, কী হলো
কেন
এমন হলো
কেন
ছেলেটি আর এদিকে আসে না
নীল
জামাপরা মেয়ে কোথায় হারালো?
পুরুষ
চড়ুইটি তখন তার সঙ্গীর কানে কানে বলল:
ওরা
হারিয়ে গেছে- দূর থেকে দূরে, বহুদূরে, অনেক দূরে!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন