মঙ্গলবার, ২৯ মে, ২০১২

ঘুম আসে না কাঁঠালচাঁপার গন্ধে

আম্মু বলেন পড়রে সোনা
আব্বু বলেন মন দে,
পাঠে আমার মন বসে না
কাঁঠালচাঁপার গন্ধে। (আল মাহমুদ)
শৈশবে মায়ের মুখে ছড়া শুনে কাঁঠালচাঁপা নামের সাথে প্রথম পরিচয়। ফুলের সঙ্গে পরিচয় আরো পরে। এই গ্রীষ্মে ঘন ঝোঁপে সবুজ পাতার ফাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলের বাগানে হঠাৎ দেখা পেলাম কাঁঠালচাঁপার। লতাময় ঝোঁপের আড়ালে সদ্য ফোটা কাঁঠালচাঁপার উচ্ছ্বাস সত্যিই নজরকাড়া। মিষ্টি হলুদ রঙের কাঁঠালচাঁপা আমাদের সবারই প্রিয় ফুল।
কাঁঠালচাঁপা গ্রীষ্মকালে ফুটতে শুরু করে। ফুল ফোটা অব্যাহত থাকে বর্ষাকাল পর্যন্ত। কাঁঠালচাঁপা গাছ দেখতে ঝোঁপ জাতীয়। শক্তলতার বিন্যাস এক সময় ঝোঁপে পরিণত হয়। গাঢ় সবুজ পাতা, পাতার বুনন অত্যন্ত নিবিড়। তাই ফুল ফোটার আগে পাতাময় কাঁঠালচাঁপার ঝাড়ের সৌন্দর্যও দেখার মতো। ফুলের রঙ প্রথমে হালকা সবুজ। প্রস্ফুটিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হলদে রঙ ধারণ করতে শুরু করে। পরিপূর্ণ ফুটন্ত ফুলের রঙ উজ্জ্বল হলুদ। ফুল পাতার ফাঁকে বোঁটায় ঝুলে থাকে। কাঁঠালচাঁপা গাছে পাতা এতটাই ঘন যে, ফুল সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না। যদিও গাঢ় সবুজের কোলে ছোট্ট ফুলের মিষ্টি হলুদ হাসি অপূর্ব, মনোমুগ্ধকর।
কাঁঠালচাঁপা বিখ্যাত এর সুগন্ধের জন্য। পরিপূর্ণ বিকশিত ফুলে ঠিক যেন পাকা কাঁঠালের মধুর ঘ্রাণ। গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে হাওয়ায় হাওয়ায়। এমন আকুল করা মিষ্টি ঘ্রাণে উদাস হয় হৃদয়-মন। ছয় পাপড়ির উচ্ছ্বলতা আর মনোলোভা ঘ্রাণের জন্য পুষ্পপ্রেমীদের কাছে তাই কাঁঠালচাঁপার বিপুল জনপ্রিয়তা। অনেক বাগানেই এ গাছের দেখা মেলে। ঢাকায় শাহবাগের কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে বেশ কয়েকটি কাঁঠালচাঁপার গাছ রয়েছে। ফুলের বোঁটা বাঁকা, আঁকশির মতো। ফল গোলাকার, ডালের মাথায় থোকায় থোকায় ঝুলে থাকে। বীজ ও কলমের মাধ্যমে কাঁঠালচাঁপার বংশবিস্তার। ইন্দো-মালয়ী প্রজাতির গাছ এটি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

অর্কিড কাঞ্চনে মুগ্ধতা

পৌষের এক কুয়াশামোড়ানো সকালে প্রকৃতির একটু সবুজ ছোঁয়া পেতে গিয়েছিলাম রাজধানীর রমনা পার্কে। শীতের চাদর ফুঁড়ে এক চিলতে রোদের ঝিলিক ভারী মিষ্টি ...