গ্রীষ্ম কেবল কাঠফাটা রোদ্দুর, তপ্ত হাওয়া আর কালবোশেখীর প্রবল ঝড়ের মৌসুম নয়। বাহারি ফুলের সমারোহে গ্রীষ্ম ঋতু প্রকৃতির রাজ্যে যোগ করেছে ভিন্ন সুষমা। গুচ্ছ গুচ্ছ কাঠগোলাপের বর্ণালি শোভা অন্তত সেটাই মনে করিয়ে দেয়। পাতার ফাঁকে সাদা, লাল, গোলাপি আর হলুদাভ রঙের ছিটায় এটি আমাদের দৃষ্টি কাড়ে। রৌদ্রপ্রখর দিনে কাঠগোলাপের মিষ্টি সুবাস আর রঙিন পাপড়ি যেন সবার মধ্যে সুখের পরশ বুলিয়ে যায়। এর অনুপম সেীন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন:
ফুলগুলি যেন কথা
পাতাগুলি যেন চারিদিকে তার
পুঞ্জিত নীরবতা।
রঙের বৈচিত্রের মতো পরিচিতিতেও এটি বহুরূপী। কাঠগোলাপ ছাড়াও গুলাচ, কাঠচাঁপা, গোলকচাঁপা, গৌরচাঁপা, চালতাগোলাপ ইত্যাদি নামে একে ডাকা হয়। কাঠগোলাপের প্রজাতি বহু ও বিচিত্র। সুদূর গুয়াতেমালা, মেক্সিকো থেকে এসে এটি ছড়িয়ে পড়েছে আমাদের উদ্যানে। দেশের নানা প্রান্তেই এর দেখা মেলে। ঢাকায় সুপরিকল্পিত বীথি না থাকলেও বিভিন্ন জায়গায় চোখে পড়ে এর বর্ণিল প্রস্ফুটন। জাতীয় জাদুঘর, ব্রিটিশ কাউন্সিল, শিশু একাডেমির বাগান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কাঠগোলাপ গাছ দেখা যায়।
শীতে পাতাহীন বৃক্ষ যেন কোনো কুশলী শিল্পীর হাতে গড়া সুনিপুণ ভাস্কর্য। নিঃশব্দে দণ্ডায়মান কাঠগোলাপ-তরু নিঃসন্দেহে দৃষ্টিনন্দন। শীতের পর বসন্তেও পত্র এবং পুষ্পশূন্য কায়ায় এটি ঘুমিয়ে থাকে। চৈত্রের শেষভাগে শুরু হয় নতুন কুঁড়ির জাগরণ। ফুটতে শুরু করে একটি-দু’টি করে ফুল। দেখতে দেখতে ফুলে ফুলে ভরে ওঠে গোটা গাছ। আর ফুলের বাসর রাঙিয়ে হেসে ওঠে সৌম্য সবুজপাতা। ডালের মাথায় থোকা থোকা ফুল যেন মনোলোভা কোনো পুষ্পস্তবক। বিশেষ করে লাল-গোলাপি রঙের ফুলগুলো সবচেয়ে আকর্ষণীয় দেখায়। তরু তলে দাঁড়িয়ে ক্লান্ত পথিক দৃষ্টি জুড়িয়ে নেয় একপলক। সঙ্গে মিষ্টি মধুর ঘ্রাণ উদাস-আকুল করে তোলে পথিকের মন। বাসি ফুলগুলো এক সময় ঝরে পড়ে। তখন গাছতলার ঝরা ফুলের সৌন্দর্যও উপভোগ করার মতো।
কাঠগোলাপ-তরু আকারে মাঝারি, উচ্চতা সাধারণত বারো থেকে ত্রিশ ফুট। নরম, ভঙ্গুর শাখা-প্রশাখা ছড়ানো-ছিটানো, দুধকষভরা। পাতা কিছুটা বড় ও লম্বা। পাঁচটি ছড়ানো পাপড়ির ফুলগুলো পাঁচ থেকে আট ইঞ্চি চওড়া। পাপড়ির কেন্দ্রে কিছুটা হলদে বা কমলা রঙের ছোঁয়া থাকে। ফুলের পাশাপাশি এর পাতার বিন্যাসের সৌন্দর্যও দৃষ্টি কাড়ে। কাঠগোলাপের বৈজ্ঞানিক নাম
Plumeria spp. (প্রজাতি অনুসারে রুবরা, অ্যালবা, টিউবারকুলেটা ইত্যাদি নামে পরিচিত)। এ গাছের নানা অংশের ওষুধি ব্যবহার রয়েছে। নারকেল তেলের সঙ্গে এর কষ চর্মরোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এ ফুল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে পবিত্রতার উৎস, পূজার উপকরণ। বৌদ্ধরা ভাবে এটি মৃত্যুহীন প্রাণের প্রতীক।
ফুলগুলি যেন কথা
পাতাগুলি যেন চারিদিকে তার
পুঞ্জিত নীরবতা।
রঙের বৈচিত্রের মতো পরিচিতিতেও এটি বহুরূপী। কাঠগোলাপ ছাড়াও গুলাচ, কাঠচাঁপা, গোলকচাঁপা, গৌরচাঁপা, চালতাগোলাপ ইত্যাদি নামে একে ডাকা হয়। কাঠগোলাপের প্রজাতি বহু ও বিচিত্র। সুদূর গুয়াতেমালা, মেক্সিকো থেকে এসে এটি ছড়িয়ে পড়েছে আমাদের উদ্যানে। দেশের নানা প্রান্তেই এর দেখা মেলে। ঢাকায় সুপরিকল্পিত বীথি না থাকলেও বিভিন্ন জায়গায় চোখে পড়ে এর বর্ণিল প্রস্ফুটন। জাতীয় জাদুঘর, ব্রিটিশ কাউন্সিল, শিশু একাডেমির বাগান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কাঠগোলাপ গাছ দেখা যায়।
শীতে পাতাহীন বৃক্ষ যেন কোনো কুশলী শিল্পীর হাতে গড়া সুনিপুণ ভাস্কর্য। নিঃশব্দে দণ্ডায়মান কাঠগোলাপ-তরু নিঃসন্দেহে দৃষ্টিনন্দন। শীতের পর বসন্তেও পত্র এবং পুষ্পশূন্য কায়ায় এটি ঘুমিয়ে থাকে। চৈত্রের শেষভাগে শুরু হয় নতুন কুঁড়ির জাগরণ। ফুটতে শুরু করে একটি-দু’টি করে ফুল। দেখতে দেখতে ফুলে ফুলে ভরে ওঠে গোটা গাছ। আর ফুলের বাসর রাঙিয়ে হেসে ওঠে সৌম্য সবুজপাতা। ডালের মাথায় থোকা থোকা ফুল যেন মনোলোভা কোনো পুষ্পস্তবক। বিশেষ করে লাল-গোলাপি রঙের ফুলগুলো সবচেয়ে আকর্ষণীয় দেখায়। তরু তলে দাঁড়িয়ে ক্লান্ত পথিক দৃষ্টি জুড়িয়ে নেয় একপলক। সঙ্গে মিষ্টি মধুর ঘ্রাণ উদাস-আকুল করে তোলে পথিকের মন। বাসি ফুলগুলো এক সময় ঝরে পড়ে। তখন গাছতলার ঝরা ফুলের সৌন্দর্যও উপভোগ করার মতো।
কাঠগোলাপ-তরু আকারে মাঝারি, উচ্চতা সাধারণত বারো থেকে ত্রিশ ফুট। নরম, ভঙ্গুর শাখা-প্রশাখা ছড়ানো-ছিটানো, দুধকষভরা। পাতা কিছুটা বড় ও লম্বা। পাঁচটি ছড়ানো পাপড়ির ফুলগুলো পাঁচ থেকে আট ইঞ্চি চওড়া। পাপড়ির কেন্দ্রে কিছুটা হলদে বা কমলা রঙের ছোঁয়া থাকে। ফুলের পাশাপাশি এর পাতার বিন্যাসের সৌন্দর্যও দৃষ্টি কাড়ে। কাঠগোলাপের বৈজ্ঞানিক নাম

